‘শালা নাটক করতাসে। এমনি রাস্তায় পড়ে আছে।’ সহকর্মী মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার পর নির্বিকারভাবে এমনটাই বলেছিলেন পুলিশ কনস্টেবল কাউসার আহমেদ। গতকাল শনিবার (৮ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশানে দূতাবাস পাড়ায় পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে গুলি করেন তার সহকর্মী কাউসার।
এরপর সেখানকার নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে আটক হন এ পুলিশ সদস্য। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার তদন্তে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনার সময় মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ ছিলেন কনস্টেবল কাউসার। তবে, তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, মনিরুল ইসলামকে গুলি করে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের প্রধান ফটকের সামনে এসে দাঁড়ান কাউসার। তখন প্রধান ফটকে ২-৩ জন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। তারা গুলির শব্দ শুনতে পেলেও তখন ধারণা করতে পারেননি যে, কাউসার তার সহকর্মীকে গুলি করে এসেছেন।
গেটে দাঁড়ানো অবস্থায় কাউসারকে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের নিরাপত্তারক্ষীরা জিজ্ঞেস করেন, মনিরুল কেন রাস্তায় পড়ে আছেন। তখন কাউসার উত্তরে বলেন, ‘শালা নাটক করতাছে। এমনি রাস্তায় পড়ে আছে।’ এ কথা বলে কনস্টেবল কাউসার দূতাবাসের বিপরীত পাশের রোডে চলে যান। এরইমধ্যে নিরাপত্তারক্ষীরা বুঝতে পারেন যে মনিরুলকে কাউসার গুলি করেছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তারক্ষী জানান, ঘটনা বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই কাউসারকে গ্রেপ্তার করেন তারা। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমরা দূতাবাসের ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ৭-৮ রাউন্ড গুলি শব্দ শুনে আমরা বাইরে আসি।
বাইরে আসার পর কনস্টেবল কাউসারকে দেখি দূতাবাসের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আর একটু দূরেই পড়ে রয়েছে কনস্টেবল মনিরুল। তখন আমরা কাউসারকে জিজ্ঞেস করি, কী হয়েছে? তখন সে বলে, ‘শালা নাটক করতাছে, এমনি মাটিতে পড়ে রয়েছে’।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় এরই মধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বারিধারা এলাকায়। ঘটনাস্থল ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে মোতায়েন রাখা হয়েছে ডিবি, সোয়াটসহ পুলিশের একাধিক দল।